ট্র্যান্স মতবাদ ৪: কেন আমাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন?

কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ মেনে নিলে সমস্যা কী? আপনার এতে করে কী ক্ষতি হচ্ছে?

ক্ষতি আমার না, আমাদের। পুরো সমাজের।

ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ মেনে নিলে সমস্যা কী?

মহান আল্লাহর নির্ধারিত সীমার লঙ্ঘন: প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, ট্র্যান্সজেন্ডার মহান আল্লাহর বিরুদ্ধে চরম সীমালঙ্ঘন। এটি আল্লাহর সৃষ্টিতে ইচ্ছাকৃত পরিবর্তন আনা, সমলিঙ্গের মধ্যে যৌনতাসহ নানা বিকৃত যৌনতার স্বাভাবিকীকরণ এবং মহান আল্লাহর নির্ধারিত পরিবার ও সামাজিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিদ্রোহ। মুসলিম হিসেবে এ ধরনের চরম সীমালঙ্ঘন আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না। মুসলিমদের দায়িত্ব আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার – সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করা এবং সত্যকে স্পষ্ট করা। তাই ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ নিয়ে ইসলামের অবস্থান নিয়ে আলোচনা পরে আসছে।

সামাজিক ও আইনী সমস্যা: ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ স্বাভাবিকীকরণের কিছু আইনী ও সামাজিক সমস্যা সহজেই চোখে পড়ে। নিজেকে পুরুষ দাবি করা নারী উত্তরাধিকার ভাগ পাবে কীভাবে? অ্যাক্টিভিস্টদের দাবি হলো, যে নিজেকে পুরুষ দাবি করবে তাকে বাবার সম্পত্তি থেকে পুরুষের সমান ভাগই দিতে হবে। খসড়া আইনেও এমনটাই থাকার কথা। এমনটাই হয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোতে। এধরণের ফলাফল সমাজে কেমন বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে?

নিজেকে নারী দাবি করা পুরুষ কি নারীদের বাথরুম, নারীদের কমনরুম ব্যবহার করবে? আপনি কি চাইবেন আপনার বোন, স্ত্রী বা সন্তান কোন ট্র্যান্সনারীর সাথে একই বাথরুম ব্যবহার করুক? কী হবে কোন পুরুষ যখন শাড়ি বা সালওয়ার কামিজ পরে মেয়েদের সালাতের জায়গায় এসে উপস্থিত হবে? নিজেকে পুরুষ দাবি করা নারী কি সালাত আদায় করবে পুরুষদের সাথে একউই কাতারে?  

ধানমন্ডি বয়েজে ক্লাস নাইনের শারীরিকভাবে সুস্থ কোনো ছাত্র যদি হঠাৎ নিজেকে মেয়ে দাবি করা শুরু করে এবং রাষ্ট্র যদি তাকে ভিকারুননিসা স্কুলে ভর্তি হবার সুযোগ করে দেয়, তাহলে সেটা কি মেনে নেওয়া উচিত হবে? কিশোরদের ছোট্ট বালিকা আর কিশোরীদের বাথরুমে কিংবা কমনরুমে ঢুকতে দেওয়ার ফলাফল কি খুব একটা ভালো হবে? 

ট্র্যান্সজেন্ডারবাদকে বৈধতা দেওয়ার অর্থ সামাজিকভাবে যে জায়গাগুলো নারীদের জন্য নির্ধারিত সেখানে পুরুষের অনুপ্রবেশের পথ করে দেওয়া। একটু চিন্তা করলে এ সমস্যাগুলো যে কেউ ধরতে পারবেন। কিন্তু এর চেয়েও বড় সমস্যা আছে।

সমলিঙ্গের সাথে যৌনতার স্বাভাবিকীকরণ: ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের অবধারিত ফলাফল হলো সমকামিতার স্বাভাবিকীকরণ এবং বৈধতা দেওয়া। মনে করুন, জামাল নামের এক পুরুষ নিজেকে নারী বলে দাবি করা শুরু করলো। আইন তাকে নারী বলে মেনে নিলো। এখন বিয়ে কিংবা যৌনচাহিদা মেটাতে গিয়ে সে কী করবে?

সে যদি কোনো পুরুষকে বেছে নেয়, তাহলে সেটা হবে সমলিঙ্গের সাথে যৌনতা। কারণ জামাল যদিও নিজেকে নারী দাবি করছে, কিন্তু আসলে সে একজন পুরুষ সে যাকে বেছে নিয়েছে সেও পুরুষ। কাজেই এটা সমলিঙ্গের মধ্যে যৌনতা। যদিও ‘দূর থেকে’ তাদের স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকা মনে হয়।

অন্যদিকে জামাল যদি কোনো নারীকে বেছে নেয়, তাহলে কার্যত সেটা সমলিঙ্গের মধ্যে যৌনতা হবে না। কিন্তু আপাতভাবে, সমাজের চোখে, যারা বিস্তারিত জানবে না তাদের কাছে একে মনে হবে সমকামিতা। কারণ জামাল নিজেকে নারী হিসেবে উপস্থাপন করে একজন নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক করছে।

অর্থাৎ যা-ই বেছে নেওয়া হোক না কেন, দিন শেষে সমকামিতার স্বাভাবিকীকরণ ঘটবে।

অসুস্থতা ও বিকৃতির স্বাভাবিকীকরণ: ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ বাস্তবতাকে অস্বীকার করার আবদার জানায়। একজন পুরুষকে নারী হিসেবে মেনে নিতে বলা কিংবা একজন নারীকে পুরুষ হিসেবে মেনে নিতে বলার অর্থ হলো বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে বলা। বিভ্রান্তি ও বিকৃতির স্বীকৃতি দেওয়া।

অ্যানোরেক্সিয়া (Anorexia) নামের রোগ হলে মানুষের খাওয়ার ইচ্ছা অস্বাভাবিক রকম কমে যায়। সবসময় ওজন বেড়ে যাবার আতঙ্ক কাজ করে। অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে। এ ধরনের রোগীরা বিপজ্জনক রকমের আন্ডারওয়েট হলেও নিজেদের মোটা ভাবে।

তাদের এই ভাবনাকে কি মেনে নেওয়া উচিত? নাকি তাদের চিকিৎসা এবং কাউন্সেলিং দরকার? 

বডি আইডেন্টিটি ইন্টেগ্রিটি ডিসঅর্ডার নামে একটা মানসিক রোগ আছে। এই অসুখ হলে রোগী মনে করতে শুরু করে যে তার শরীরের কোনো একটা অংশ আসলে তার না। হয়তো নিজের ডান পা-কে তার কাছে অপরিচিত লাগতে শুরু করে। তখন সে ঐ পা কেটে বাদ দিতে চায়। 

শারীরিকভাবে তাদের কোনো সমস্যা নেই। শরীরের যে অংশটা তারা বাদ দিতে চাচ্ছে, সেখানেও কোনো সমস্যা নেই। সমস্যাটা তাদের মনে। কোনো কারণে অপারেশনে করে হাত বা পা কেটে ফেলতে হয়েছে, এমন মানুষের প্রতি এ ধরনের রোগীদের মধ্যে তীব্র ঈর্ষা কাজ করে।

এমন রোগীদের চিকিৎসা কী হওয়া উচিত? তাদের কি অপারেশন করে নিজেদের হাত-পা কেটে ফেলতে দেওয়া উচিত?

না, এক্ষেত্রে সবাই বলবে, শরীর সুস্থ, রোগটা মনে। অসুস্থ মনের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য শরীরের ক্ষতি না করে, মনের চিকিৎসা করা জরুরি।[1] 

কিন্তু ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে সম্পূর্ণ উল্টো কথা। মনের সমস্যার চিকিৎসা নিয়ে কারো মাথাব্যাথা নেই, শুধু শরীর বদলাতে বলা হচ্ছে।

মনের অসুখের চিকিৎসার বদলে শরীরকে বদলানো হচ্ছে। কেউ এসে বলছে সে ট্র্যান্সজেন্ডার, ব্যস সেটা মেনে নিয়ে বলা হচ্ছে শরীর বদলে ফেলতে। মনের রোগ ভালো করা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাচ্ছে না কেউ।

শুধু তাই না, কিছু মানুষের মানসিক বিকারের কারণে পুরো সমাজকে তার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে বলা হচ্ছে, বলা হচ্ছে আইন পাল্টাতে। এটা কীভাবে যৌক্তিক হতে পারে? 

স্রেফ ‘মনে হওয়া’, নিছক আবেগ আর অনুভুতি দিয়ে বাস্তবতাকে ভুলে থাকা যায় না। একজন পুরুষকে নারী হিসেবে মেনে নেওয়ার অর্থ নারীত্বের ধারণাকে ধ্বংস করা। একজন নারীকে পুরুষ হিসেবে মেনে নেওয়ার অর্থ পুরুষত্ব অর্থহীন সাব্যস্ত করা।

আপনি যখন অস্বাভাবিকতাকে স্বাভাবিক বলবেন, অসুস্থতাকে সুস্থতা বলবেন তখন সেটা প্রভাবিত করবে পুরো সমাজকে। চিন্তা করুন, আপনি যখন পাঠ্যবইয়ে আর ক্লাসরুমে ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ শেখাবেন, তখন কিশোর-কিশোরীদের উপর এর প্রভাব কেমন হবে? আপনি যখন এই আচরণকে স্বাভাবিক বলবেন, তখন সেটার ফলাফল কী হবে? মানসিক অসুস্থতা আর আচরণগত বিকৃতিকে যখন মিডিয়ার মাধ্যমে রংচং চড়িয়ে মহিমান্বিত করে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তখন কী হবে? বিকৃতির স্বীকৃতির অর্থ সেটার স্বাভাবিকীকরণ এবং প্রসার।

পরিবার ও সমাজের অনিবার্য পতন: ট্র্যান্সজেন্ডারবাদকে গ্রহণ করার ফলাফল হলো বিভিন্ন যৌন বিকৃতিকে স্বাভাবিক ও বৈধ বলে মেনে নেওয়া। নারী এবং পুরুষের মাঝের বিভেদ, সীমারেখা মুছে দেওয়া। যে নিজেকে যা দাবি করবে তা গ্রহণ করে নেওয়া। কারো শরীরের দিকে আর তাকানো হবে না। শুধু দাবির দিকে তাকানো হবে। দেহ যদি অর্থহীন হয় তাহলে অর্থহীন হয়ে যাবে নারী, পুরুষ, বিয়ে, পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা এবং পরিবারের মতো ধারণাগুলোও। ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ মূলত ভাষাগত, চিন্তাগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আইনীভাবে এই বিভাজনগুলো মুছে দেয়ার লক্ষ্যে গড়ে ওঠা আন্দোলন। এ মতবাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো সৃষ্টি ও সমাজের সব কাঠামো ভেঙে ফেলা।

ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের ব্যাপারে ইসলামের অবস্থান 

ইসলাম আমাদের শেখায় এ মহাবিশ্বে যা কিছু আছে; যা কিছু দৃশ্যমান এবং যা কিছু অদৃশ্য, সব কিছুর মালিক আল্লাহ। তিনি মালিকুল মুলক। আসমান ও যমীনসমূহের একচ্ছত্র অধিপতি। বনী আদম বা মানুষ–মহান আল্লাহর দাস এবং পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি।

আল্লাহ মানুষকে অসংখ্য নিয়ামত দিয়েছেন। আমাদের শরীর, সুস্থতা, আয়ু, জীবন–সবকিছুই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ামত। তিনিই জন্ম, মৃত্যু এবং রিযিকের মালিক। কিন্তু এই শরীরের উপর আমাদের মালিকানা সার্বভৌম না। চাইলেই আমি এই শরীরকে ইচ্ছেমতো বদলাতে পারি না। ইচ্ছেমতো যেকোনো কিছু খেতে পারি না। চাইলেই যেকোনো ভাবে, যে কারো সাথে, যে কোনো সময় ভাগাভাগি করতে পারি না শরীরের উষ্ণতা। মহান আল্লাহর বেঁধে দেওয়া হালাল ও হারামের সীমানা মানুষকে মেনে চলতে হয়। মানুষ দুনিয়াতে অবাধ্য হলে আখিরাতে তার জন্য থাকবে শাস্তি।

আমাদের জান, মাল, সময়, সম্পদ, শরীর–সব ক্ষেত্রে সব অধিকারের উৎস হলেন মহান আল্লাহ। মানুষ নিজে তার অধিকার আবিষ্কার করে না। রাষ্ট্র বা অন্য কোনো পার্থিব শক্তি অধিকার তৈরি করে না। জাতিসংঘের কোনো দলিল, কোনো সংবিধান কিংবা সমসাময়িক মানুষের ধ্যানধারণা থেকে অধিকার আসে না। সৃষ্টির অধিকার আসে সৃষ্টির মালিকের কাছ থেকে। মানুষ সার্বভৌম না। মানুষ কিংবা অন্য কোনো সৃষ্টি নিজের নিয়ম বানাতে পারে না। আল্লাহ যা বৈধ করেছেন তার বাইরে আর কোনো কিছু করার অনুমোদন মানুষের নেই। আল্লাহ যা অবৈধ করেছেন তার অনুমোদন দেওয়ার অধিকারও মানুষের নেই।

মুসলিম হিসেবে আমাদের মাপকাঠি হলো ইসলাম। পবিত্র কুরআনের আরেকটি নাম হলো আল-ফুরকান, যার অর্থ হলো সত্য মিথ্যার পার্থক্য নির্ধারণকারী। আমরা জানি সত্যমিথ্যা, ভালোমন্দ, হারাম-হালাল নির্ধারিত হয় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে।

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারী উক্ত নির্দেশের ভিন্নতা করার কোনো অধিকার রাখে না। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে সে স্পষ্টতই সত্য পথ হতে দূরে সরে পড়লো। [তরজমা, সূরা আল-আহযাব, আয়াত ৩৬]

আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য হলো মহান আল্লাহর ইবাদাত করা এবং তাঁর নির্ধারিত মাপকাঠি অনুযায়ী আমাদের জীবন পরিচালনা করা। আসুন দেখা যাক, এ ব্যাপারে ইসলাম আমাদের কী সমাধান দেয়।

মানুষ নারী এবং পুরুষ: ইসলাম আমাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, আল্লাহ মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন হয় পুরুষ অথবা নারী হিসেবে। এর বাইরে তৃতীয় লিঙ্গ, ট্র্যান্সজেন্ডার বা অন্য যা কিছু আছে সেগুলো মানুষের তৈরি করা শ্রেণীবিভাগ। আর তিনিই যুগল সৃষ্টি করেন- পুরুষ ও নারী। [তরজমা, সূরা আন-নাজম, আয়াত ৪৫]

  • আর শপথ তাঁর, যিনি সৃষ্টি করেছেন পুরুষ ও নারী। [তরজমা, সূরা আল-লাইল, আয়াত ৩]
  • বস্তুতঃ পুত্র কন্যার মতো নয়। [তরজমা, সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৩৬]
  • আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে। [তরজমা, সূরা আর-রূম, আয়াত ২১]
  • হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একই ব্যক্তি হতে আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। [তরজমা, সূরা আন-নিসা, আয়াত ১]

ব্যক্তির কী “মনে হয়”, সেটা নয় বরং ইসলাম দৈহিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে মানবজাতিকে নারী ও পুরুষ হিসেবে নির্ধারণ করেছে। মহান আল্লাহ দেহ আর আত্মপরিচয়ের মধ্যে পার্থক্য করেননি। শরীয়াহতে জন্মগত লিঙ্গ আর মনস্তাত্ত্বিক লিঙ্গবোধ বলে আলাদা কিছু নেই। আল্লাহ যাকে পুরুষের দেহ দিয়েছেন সে পুরুষ। যাকে তিনি নারী দেহ দিয়েছেন সে নারী। এবং মহান আল্লাহ ভুল করেন না। যদি কারো মনে হয় সে ভুল দেহে আটকা পড়েছে তাহলে সমস্যা তার মনে। চিকিৎসার মাধ্যমে মনের রোগের সমাধান করতে হবে। শরীরকে বদলানো যাবে না।  

তৃতীয় লিঙ্গ বলে কিছু নেই: ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে তৃতীয় লিঙ্গ বলে কিছু নেই। যদি কোনো মানুষের দেহে নারী ও পুরুষ উভয়ের বৈশিষ্ট্য থাকে, অর্থাৎ কেউ যদি আধুনিক চিকিৎসার পরিভাষায় আন্তঃলিঙ্গ বা Intersex হয়, সেক্ষেত্রেও তাকে হয় নারী বা পুরুষ গণ্য করা হবে। তৃতীয় কিছু না।

যাদের শারীরিক ত্রুটি আছে, তাদের শরীরেও পুরুষ বা নারী কোনো একটি দিকের প্রাধান্য থাকে এবং সেটা অনুযায়ী তাদের বিচার করা হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ দৈহিক বৈশিষ্ট্য পুরুষের কাছাকাছি এমন ‘হিজড়াদের’ পুরুষ ও দৈহিক বৈশিষ্ট্য নারীদের কাছাকাছি এমন ‘হিজড়াদের’ নারী হিসেবে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।[2]

কিন্তু এমন ব্যক্তি নারী নাকি পুরুষ, তা বোঝা যাবে কীভাবে?

এ নিয়ে ইসলামী ইতিহাসের আলিমগণ বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। সংক্ষেপে-

কারো মধ্যে যদি নারী ও পুরুষ উভয়ের যৌনাঙ্গ থাকে (অত্যন্ত দুর্লভ) সেক্ষেত্রে কোন দিক দিয়ে সে প্রস্রাব করছে তার ভিত্তিতে তাকে নারী অথবা পুরুষ গণ্য করা হবে। উদাহরণস্বরূপ এ ধরনের কোনো ব্যক্তির প্রস্রাব যদি পুরুষাঙ্গ নিয়ে নির্গত হয় তাহলে সে পুরুষ এবং সে সমাজ ও আইনের চোখে পুরুষ হিসেবেই গণ্য হবে। এবং সে স্বাভাবিকভাবে পুরুষের মতোই জীবনযাপন করবে।

এভাবে বোঝা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে বয়ঃসন্ধির সাথে জড়িত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের দিকে তাকানো হবে। যদি একেবারে কোনোভাবেই বোঝা না যায়, তাহলে সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ বিধান প্রযোজ্য হবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে একজন মানুষের শরীরের প্রজননব্যবস্থা কী শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য তৈরি নাকি ডিম্বাণু উৎপাদনের জন্য তৈরি, তা খুব সহজে জানা সম্ভব। কাজেই ইসলামের অবস্থান অনুযায়ী আমল করার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো জটিলতা নেই।

কোনো ব্যক্তির প্রজননব্যবস্থা পুরুষের, অর্থাৎ তার দেহ শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য তৈরি, কিন্তু যৌন বিকাশের ত্রুটির কারণে বাহ্যিকভাবে তার মধ্যে বিপরীত লিঙ্গের কিছু বৈশিষ্ট্য (যেমন স্তনের মতো অঙ্গ) আছে- এমন ক্ষেত্রে সেই ত্রুটি দূর করার জন্য শর্তসাপেক্ষে অস্ত্রোপচারের বৈধতা আধুনিক আলিমগণ দিয়েছেন। একই কথা নারীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যেমন অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক কন্যাশিশুর জন্মের সময় যোনিপথ বন্ধ থাকে, যা অপারেশনের মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব, এ ধরনের চিকিৎসা গ্রহণকে ইসলাম নিষিদ্ধ বলে না।

উল্লেখ্য, এ ধরনের অস্ত্রোপচার সীমিত পরিসরে জায়েয এবং এর উদ্দেশ্য হলো, একজন মানুষের শরীরকে তার দেহের প্রজননন ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা। বিকলাঙ্গতা দূর করা। ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের লিঙ্গ পরিবর্তন সার্জারি সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। শারীরিকভাবে সুস্থ মানুষের ‘লিঙ্গ পরিবর্তন’ জাতীয় কোনো অস্ত্রোপচার ইসলামী শরীয়াহতে বৈধ না।[3]

এ তো গেল আন্তঃলিঙ্গ বা ইন্টারসেক্সের কথা। কিন্তু যাদের শারীরিক কোনো ত্রুটি নেই কিন্তু তাদের আচার-আচরণ বিপরীত লিঙ্গের মতো, তাদের ব্যাপারে ইসলামের অবস্থান কী?

ইচ্ছাকৃতভাবে বিপরীত লিঙ্গের বেশ ধারণ করা এবং অনুকরণ করা নিষিদ্ধ।

 ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেছেন:

“রাসূলুল্লাহ ﷺ পুরুষদের মধ্যে নারীর বেশ ধারণকারীদের এবং নারীদের মধ্যে পুরুষের বেশ ধারণকারিণীদের অভিশাপ দিয়েছেন।” [সহীহ বুখারী; মিশকাত, হাদীস নং ৪৪২৯]

রাসূলুল্লাহ ﷺ আরো বলেছেন,

আল্লাহ সেসব মানুষদের উপর অভিসম্পাত করেছেন যারা তাঁর সৃষ্টিতে বিকৃতি আনে। (বুখারী, হাদীস নং ৪৮৮৬)

কাজেই সম্পূর্ণ সুস্থ শরীর নিয়ে কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বিপরীত লিঙ্গের বলে দাবি করে, বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পরে, অনুকরণ করে এবং ‘লিঙ্গ পরিবর্তন’ সার্জারি করে- তাহলে এর সবগুলোই হারাম।

তবে এমন কিছু মানুষ থাকতে পারে জন্মগতভাবে যাদের স্বভাবে (দেহে না) বিপরীত লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন ছোটবেলা থেকেই কোনো পুরুষের স্বভাব ও চালচলনে মেয়েলী কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে তার দায়িত্ব হলো সাধ্যমত এগুলো বদলানোর চেষ্টা করা। যথাসাধ্য চেষ্টা করার পরও যদি পরিবর্তন না আসে এবং সে যদি হারাম কোনো কাজ না করে থাকে, তাহলে সে গুনাহগার হবে না। অন্যদিকে সে যদি নিজেকে বদলানোর চেষ্টা না করে উল্টো নারীদের পোশাক পরতে শুরু করে, নিজেকে নারী বলে পরিচয় দেয়, তাহলে সে গুনাহগার হবে। কাজেই ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ সরাসরি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক।[4]

ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ মহান আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের শামিল। বিতাড়িত হবার সময় ইবলিস মহান আল্লাহকে বলেছিল,

‘…অবশ্যই আমি তোমার বান্দাদের এক নির্দিষ্ট অংশকে (অনুসারী হিসেবে) গ্রহণ করবো। আর অবশ্যই আমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করবো, মিথ্যা আশ্বাস দেবো এবং অবশ্যই তাদেরকে আদেশ দেবো, ফলে তারা পশুর কান ছিদ্র করবে এবং অবশ্যই তাদেরকে আদেশ করবো, ফলে অবশ্যই তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবে।’ [তরজমা, সূরা আন-নিসা, আয়াত ১১৮-১১৯]

এ আয়াতের স্পষ্ট প্রতিফলন আজ আমরা ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের মধ্যে দেখতে পাই। ট্র্যান্সজেন্ডার আক্ষরিক অর্থেই একটি শয়তানী অ্যাজেন্ডা। মহান আল্লাহ বলেছেন,

‘…আর যারা আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে, তারা তো স্পষ্টই ক্ষতিগ্রস্ত হলো।’ [তরজমা, সূরা আন-নিসা, আয়াত ১১৯]

ট্র্যান্সজেন্ডারের অবশম্ভাবী পরিণতি হলো সমকামিতাসহ অন্যান্য যৌন বিকৃতি, যা ইতিমধ্যে আমরা আলোচনা করেছি। সমকামিতা জঘন্য অপরাধ। এ অপরাধের কারণে আল্লাহ লূত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়কে কঠিন শাস্তি দিয়েছেন। কুরআনের ৭০টির বেশি আয়াতে লূত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের প্রতি পাঠানো শাস্তির আলোচনা আছে। 

রাসূলুল্লাহ ﷺ জানিয়েছেন,

‘আল্লাহ তা’আলা এমন ব্যক্তির প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে কখনো তাকাবেন না যে সমকামে লিপ্ত হয়।’ [ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস নং ১৬৮০৩; তিরমিযী, হাদীস নং ১১৬৫]

ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন –

‘অভিশপ্ত ঐ ব্যক্তি যে কোনো জন্তুর সাথে সঙ্গম করে। অভিশপ্ত ঐ ব্যক্তি যে কওমে লূতের অনুরূপ (অর্থাৎ সমকামিতা) করে।’ [মুসনাদ ইমাম আহমাদ, সহীহ আল-জামি’ আল-আলবানী]

ইসলামের দিক থেকে সমকামিতা শুধু হারামই না, বরং গুনাহর মধ্যেও অত্যন্ত গুরুতর একটি গুনাহ। চরম পর্যায়ের সীমালঙ্ঘন। যারা এই কাজে লিপ্ত তাদের উপর অভিশাপ দিয়েছেন আল্লাহ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

কাজেই একজন মুসলিমের পক্ষে কোনোভাবেই ট্র্যান্সজেন্ডারবাদকে মেনে নেওয়া সম্ভব না। সৎ কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ মুসলিমদের দায়িত্ব। এ দায়িত্বের জায়গা থেকে ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের স্বাভাবিকীকরণের বিরুদ্ধে মুসলিমদের অবস্থান নিতে হবে। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে বাঁচাতে হলে অবস্থান নিতে হবে বিকার ও বিকৃতির স্বাভাবিকীকরণের এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে। ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের স্বাভাবিকীকরণের ফলাফল হবে সমাজের নৈতিকতা ও মূল্যবোধের কাঠামোকে পুরোপুরিভাবে উপড়ে ফেলা। 

 ধরনের প্রবণতা যাদের মধ্যে আছে তাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত?

ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো আমরা মানুষকে তার কাজ দিয়ে বিচার করি। কারো মধ্যে যিনা করার কিংবা মাদক ব্যবহারের ইচ্ছা থাকতে পারে। এই ইচ্ছার কারণে কাউকে আমরা দোষী বলি না। যদি সে এই ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করে, তখন তাকে দোষী বলা হয়। তখন তাকে দেওয়া হয় শাস্তি।

শৈশবে বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পরা, সাজগোজ করা, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া, সমকামী অশ্লীল ভিডিও দেখা ইত্যাদি কারণে কোনো কোনো ব্যক্তির সমলিঙ্গের প্রতি ক্ষণিক আকর্ষণ জন্মাতে পারে অথবা আত্মপরিচয়ের ব্যাপারে তৈরি হতে পারে বিভ্রান্তি। কারো মধ্যে অসুস্থতা থাকলে,  স্রেফ অতোটুকু কারণে আমরা তাকে দোষী বলি না। কারো সাহায্যের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের দূরে ঠেলে দেবো না। কারও প্রতি না-ইনসাফী করবো না।

আমরা সহানুভূতিশীল হবো, ইসলাম আমাদের সবার সাথে ইনসাফ করতে শেখায়। আমরা ইনসাফ করবো। উপমহাদেশীয় সংস্কার-কুসংস্কার কিংবা সমাজের সব চিন্তাচেতনা আমরা অন্ধভাবে গ্রহণ করবো না। আমরা নবী ﷺ-এর সুন্নাহ অনুযায়ী মানুষের সাথে আচরণ করার চেষ্টা করবো। এমন মানুষদের উপর আক্রমণ না করে, কটু কথা না বলে, একঘরে করে না রেখে, চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা একান্ত প্রয়োজন। এজন্য দরকার ইসলামী শরীয়াহর আলোকে যথাযথ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ।

কিন্তু ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতি আর অসুস্থতার স্বীকৃতি এক না। স্বাধীনতা কিংবা সহিষ্ণুতার নামে আমরা অসুস্থতাকে মেনে নিতে পারি না। মানসিক অসুস্থতা আর অস্বাভাবিক আচরণকে স্বাভাবিক বলে স্বীকৃতি দিতে পারি না। এটা অসম্ভব। অস্বাভাবিকতাকে স্বাভাবিকতা বলা হলে, অসুস্থতাকে সুস্থতা বলা হলে তা পুরো সমাজকে অসুস্থ করে তুলবে। আর ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ ঠিক তাই করছে। অস্বাভাবিকতার স্বীকৃতির অর্থ সেটার প্রসার। এতে করে যারা অসুস্থ তাদের উপকার হবে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হবে। অপরিমেয় ক্ষতি হবে সমাজেরও।

মুসলিমদের দায়িত্ব আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার – সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করা এবং সত্যকে স্পষ্ট করা। অনেক পথশিশু মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কারণে অল্প বয়সে মাদক ব্যবহার করা শুরু করে, অনেকে ব্লেড দিয়ে নিজের শরীরে কাটাকাটি করে। আমরা অবশ্যই এ শিশুদের প্রতি সহানুভূতি অনুভব করি। তাদের সাহায্য করা আমাদের দায়িত্ব।

কিন্তু তাই বলে আমরা তাদের মাদক ব্যবহার কিংবা শরীরে কাটাকাটি করার অভ্যাসকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিতে পারি না। বৈধতা দিতে পারি না। আমরা বলতে পারি না যে, ‘এগুলো যার যার ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপার। যতোক্ষণ অন্য কারো ক্ষতি না হচ্ছে, এ ধরনের আচরণে কোনো সমস্যা নেই।’

ঐ শিশুদের সাহায্য দরকার এটা যেমন সত্য, তেমনি ঐ আচরণ যে অস্বাভাবিক, তাও সত্য। আমাদের দায়িত্ব ঐ শিশুদের এই অস্বাভাবিক আচরণ থেকে ফিরিয়ে আনা এবং সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনযাপনে সাহায্য করা, এই অসুস্থতাকে প্রশ্রয় দেওয়া না। নিজের শরীর বা আত্মপরিচয় নিয়ে সমস্যায় ভোগা মানুষদের ক্ষেত্রেও আমাদের অবস্থান একই হওয়া উচিত।

***

বেশ ক’বছর ধরে দেশে ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের স্বাভাবিকীকরণের কাজ চলছে। এসব কর্মতৎপরতার কিছু কিছু ফলাফল সম্প্রতি আমাদের সামনে আসলেও, এর সত্যিকারের মাত্রা এবং পরিধি এখনো অধিকাংশেরই অজানা। ব্যাপারটাকে স্রেফ কিছু মানসিক রোগী কিংবা বিকৃত রুচির মানুষের উদ্ভট কর্মকাণ্ড মনে করবেন না। এর পেছনে আছে বিশাল এবং প্রচণ্ড শক্তিশালী এক নেটওয়ার্ক। আমরা যখন প্রতিক্রিয়া কী হবে তা নিয়ে ভাবছি, ওরা তখন সামনের দশটা ধাপ ভেবে রেখেছে। বছরখানেকের মধ্যে হয়তো আমাদের এ বাংলাতেই ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের বৈধতা দেওয়া হবে। বিষাক্ত এ মতবাদ গ্রাস করে নেবে আমাদের সমাজকে।

ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের হুমকি নিয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন আমাদের প্রত্যেকের।

* * *

[1] S. Müller, “Body Integrity Identity Disorder (BIID)—Is the Amputation of Healthy Limbs Ethically Justified?,” American Journal of Bioethics 9:1 (January 2009), 36–43.

[2] সুনানে বাইহাকী কুবরা, হাদীস নং ১২৯৪ 

[3] বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, Vaid, Mobeen. “‘And the Male Is Not like the Female’: Sunni Islam and Gender Nonconformity.” Muslim Matters (2017).

[4] বিস্তারিত জানতে দেখুন, Vaid, Mobeen, and Waheed Jensen. ““And the Male Is Not like the Female”: Sunni Islam and Gender Nonconformity (Part II).” (2020).

অন্যান্য লেখা

সাঈদ ইবনে যায়িদ (রা) ছিলেন আশারায়ে মুবাশশারাহ’র উজ্জ্বল নক্ষত্র, যাঁর নাম ইতিহাসের পাতায় চির অক্ষয় হয়ে থাকবে। রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর নিকটতম সাহাবী ও বাল্যকালের একান্ত বন্ধু হিসেবে তিনি শুধু এক সঙ্গীই ছিলেন না,
প্রত্যেক জাতিরই একজন বিশ্বস্ত পুরুষ থাকে, আর এ উম্মতের জন্য সেই বিশ্বস্ততম ব্যক্তি হলো আবু উবাইদাহ,"—এই কথাটি রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর মুখ থেকে শুনলে আবু উবাইদাহ (রা.)-এর ব্যক্তিত্বের পূর্ণচিত্র....
সাদ (রা) ইসলামের ঘোষণা দিলে তাঁর মা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “সাদ যতক্ষণ মোহাম্মদের রিসালাতের অস্বীকৃতির ঘোষণা না দেবে ততক্ষণ আমি কিছু খাব না, কিছু পান করব না, রৌদ্র থেকে বাঁচার জন্য ছায়াতেও.......

আপনার অনুদানটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে!

আপনার সদয় অনুদানের জন্য ধন্যবাদ! আপনার উপহারটি সফলভাবে পৌছে গেছে এবং আপনি শীঘ্রই একটি এসএমএস অথবা ইমেইল পাবেন।

অনুদানের তথ্য

Thank You for Registering! 🎉

Connect Us:

See you soon! 🎉