ধার্মিক নারীবাদের প্রকৃত রূপ

হিজাবি হোক আর জিন্সি হোক সব নারীবাদের শেষ গন্তব্যই দ্বীন বিকৃতি, দ্বীনের অপব্যাখ্যা ও দ্বীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। জিন্সি নারীবাদ শুরুতেই দ্বীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসলেও হিজাবি নারীবাদ বেছে নেয় দীর্ঘ পথ। শুরুতে সে সমকালীন সমাজে নারীদের প্রতি নানা অবিচার ও জুলুমের কথা টেনে এর জন্য ধার্মিক সমাজের নানা বয়ান ও ব্যখ্যাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এক্ষেত্রে সে দাদার জামা নাতির গায়ে পরিয়ে দেয়। গ্রাম্য সালিশি মজমার আলাপকে ফতোয়া বলে চিহ্নিত করে সেক্যুলারদের সুরে সুর মিলিয়ে সমাজের ধার্মিক অংশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। কারো ব্যক্তিগত বেইনসাফি ও অপরাধকে ধার্মিক অংশের সমন্বিত অপরাধ বলে ঘোষণা দেয়।

ক্রমে তার সুর ও স্বর চড়ে যায়। আলেমদের নানা ফতোয়া ও বক্তব্য নিয়ে তার ক্রমাগত আপত্তি প্রকাশ পায়। সে বেছে নেয় দ্বীনের মুতাওয়ারাস ফাহম থেকে বিচ্ছিন্নতার পথ। অন্যসব বিভ্রান্ত ফিরকার মত সেও ঘোষণা করে সালাফের বুঝ ও ব্যখ্যাই শেষ কথা নয়, বরং সময় এসেছে তাদের ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সংযোজন ও বিয়োজনের। দ্বীনের বিধিবিধান ব্যখ্যার মুতাওয়ারাস ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হিজাবি নারীবাদ ঘোষণা করে নিজের কতৃত্বের। সে দেখাতে চায়, সালাফরা ইসলামকে ঠিকভাবে বুঝেননি, কোরআন হাদিসের গভীরে যেতে পারেননি, তারা আচ্ছন্ন হয়েছিলেন পুরুষতান্ত্রিকতায়। হিজাবি নারীবাদ ঘোষণা করে, কোরআন হাদিসে নারীর প্রতি কোনো বৈষম্য নেই, এই বৈষম্য সৃষ্টি করেছে মুফাসসিররা। মুফাসসির ও মুহাদ্দিসরা ছিলেন মিসোজিনিস্ট, তারা বেছে নিয়েছিলেন পুরুষসুলভ বেইনসাফি।

কিন্তু হিজাবি নারীবাদের এই প্রকল্প শীঘ্রই মুখ থুবড়ে পড়ে। সে আবিষ্কার করে, সালাফের ব্যাখ্যা বাদ দিলেও কোরআন হাদিসের বহু নুসুস রয়ে যায়, যা তার মনমত নয়। যৌনতানির্ভর ব্যাখ্যা বলে মুফাসসিরদের বক্তব্য বাদ দেয়া গেলেও, ‘​​​​​​তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর’ এই আয়াতকে তো অস্বীকার করা যায় না। হিজাবি নারীবাদ টের পায় সালাফরা আসলে নতুন কিছু বলেননি, তারা ইসলামের মূল স্রোতটিকেই স্পষ্ট করেছেন মাত্র।

ফলে শুরু হয় একের পর এক হাদিস অস্বীকারের ধাপ, আয়াতের অর্থ বিকৃতি ও চুড়ান্তধাপে ধর্মকেই অস্বীকার। জিন্সি নারীবাদ এক ধাপে পুরো পথ অতিক্রম করলেও হিজাবি নারীবাদ সে পথ অতিক্রম করে ধাপে ধাপে ভীরু পদক্ষেপে। যদি আল্লাহ কাউকে হিদায়াত না দেন, তাহলে শুধু মোল্লাতন্ত্রের উপর রাগ ঝেড়ে হিজাবি নারীবাদ বেশিদিন টিকতে পারে না, ধর্মের মূল ভিত্তিতে তাকে আঘাত করতে হবেই।

দিনশেষে, ধার্মিক নারীবাদ বলতে কিছু নাই, যেভাবে ধার্মিক মুরতাদ বলতেও কিছু নেই।

লেখক: ইমরান রাইহান

অন্যান্য লেখা

নবুওয়াতের তৃতীয় বর্ষে রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন তাঁর পরিবারকে সমবেত করে বললেন, “আমি এমন এক জিনিস নিয়ে এসেছি, যা দ্বীন ও দুনিয়া উভয়ের জন্য কল্যাণকর। আপনাদের মধ্যে কে আমার সঙ্গী হবে?” সবাই.....
প্রত্যেক নবীরই বন্ধু থাকে, জান্নাতে আমার বন্ধু হবে ‘উসমান’।” রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর উক্তিটির মাধ্যমেই অনুমান করা যায় উসমান (রা.) প্রিয় নবীজি ﷺ-এর কত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। খাদিজা (রা.) এর আদরের দুই কন্যা রুকাইয়া.....
উমার ইবনে খাত্তাব (রা) –ইসলামের ইতিহাসে একজন অমর নায়ক, যিনি ছিলেন ন্যায়ের জন্য নির্ভীক; সত্যের পথে অবিচল। তাঁর জীবনী যেন এক জীবন্ত মহাকাব্য, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপে জ্বলেছে.....

আপনার অনুদানটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে!

আপনার সদয় অনুদানের জন্য ধন্যবাদ! আপনার উপহারটি সফলভাবে পৌছে গেছে এবং আপনি শীঘ্রই একটি এসএমএস অথবা ইমেইল পাবেন।

অনুদানের তথ্য

Thank You for Registering! 🎉

Connect Us:

See you soon! 🎉